বেশ কিছু দিন ধরেই ফ্রান্সের রাজনীতিতে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। এই গভীর অস্থিরতার মধ্যেই এবার পদত্যাগ করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়ান লেকর্নু। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ২৬ দিনের মাথায় সোমবার (৬ অক্টোবর) নতুন মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণার পরপরই তীব্র সমালোচনার মুখে তিনি এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত নেন।
আল জাজিরার খবর অনুযায়ী, তার এই সিদ্ধান্তে ফ্রান্সের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর সোমবার এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে যে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তাঁর ঘনিষ্ঠ মিত্র লেকর্নু'র পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। প্রায় এক মাস আগে নিযুক্ত লেকর্নু মূলত ঋণ সংকটের মাঝে বিভক্ত পার্লামেন্টের মাধ্যমে বাজেট পাস করাতে ব্যর্থ হওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রবল চাপের মুখে ছিলেন।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় লেকর্নু তাঁর মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা—অনেকেই পূর্ববর্তী সরকারেও ছিলেন। এতে তাঁর বিরোধী ও মিত্র উভয়কেই ক্ষুব্ধ করে তোলে। যদিও লেকর্নু তাঁর পূর্বসূরি ফ্রাঁসোয়া বায়রুর কৌশল "ভাঙার" প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে এই তালিকা সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। এর ফলে, মাত্র ১৪ ঘণ্টার পরেই পদত্যাগ করেন ।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে লেকর্নু হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমি আপস করতে প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু প্রতিটি রাজনৈতিক দল চেয়েছিল অন্য রাজনৈতিক দল তার পুরো কর্মসূচি গ্রহণ করুক।
সেবাস্তিয়ান লেকোর্নু ছিলেন ম্যাক্রোঁর দ্বিতীয় মেয়াদের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। তার সংক্ষিপ্ত সময়ের মেয়াদে মন্ত্রিসভা গঠনই হয়ে উঠলো প্রধান রাজনৈতিক বিতর্ক। এখন দেশজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে, কে হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, আর কিভাবে এই রাজনৈতিক সংকট থেকে ফ্রান্স মুক্তি পাবে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর কার্যালয় জানায়, নতুন প্রধানমন্ত্রী মনোনয়নের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও আসেনি। ম্যাক্রোঁ এর আগেও স্পষ্ট করেছেন, ২০২৭ সালে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তিনি পদত্যাগ করবেন না।