রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন ঘিরে আবারও জমে উঠেছে প্রচারণা। লিফলেট হাতে প্রার্থীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, টুকিটাকি চত্বর, পরিবহন মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণে ব্যস্ত প্রার্থীরা। এদিন নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ।
তবে পোষ্য কোটা ইস্যুতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের শাটডাউন কর্মসূচি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা, এর জেরে ভোটের তারিখ পরিবর্তন- এসব কারণে শিক্ষার্থীরা রাকসু নির্বাচন নিয়ে অনেকটা আগ্রহ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ প্রার্থীদের।
পোষ্য কোটা ও প্রশাসনিক জটিলতা দ্রুত সমাধান করে সুষ্ঠু ও নির্ধারিত সময়ে ভোট আয়োজন নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছেন তারা।
এ দিকে রাকসু নির্বাচন পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতি। বৃহস্পতিবার সংগঠনটির কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানা সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ, সিনেট প্রতিনিধি ও হল সংসদ মিলে মোট প্রার্থী রয়েছেন ৯০২ জন। বিপরীতে, মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন। আটটি একাডেমিক ভবনের ১৭টি কেন্দ্রে ৯৯০টি বুথ থাকছে। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আগামী ১৬ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাকসু নির্বাচন।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাবি প্রশাসন পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন। ২০ সেপ্টেম্বর জুবেরী ভবনে উপ-উপাচার্যসহ কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তির ঘটনার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। পরে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে যান, ফলে স্থবির হয়ে পড়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম।
পরিস্থিতি বিবেচনায় ২২ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন ভোটের তারিখ পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর নির্ধারণ করে। ওই দিনই জামায়াতপন্থী শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন। ২৪ সেপ্টেম্বর অন্য কর্মচারীরাও সাত দিনের সময়সীমা দিয়ে কর্মবিরতি তুলে নেন। ২৫ সেপ্টেম্বর বিএনপিপন্থী তিনটি শিক্ষক সংগঠনও দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসে কর্মবিরতি স্থগিত করে।
তবে, ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া শারদীয় দুর্গোৎসবের ছুটির কারণে ক্যাম্পাস শান্ত হয়। ছুটি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরছেন। ফলে আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, আর রাকসু নির্বাচন নিয়ে আরও জোরদার হচ্ছে আলোচনা।