News update
  • Remittance surges to $2.68 billion in 29 days of November     |     
  • Probe body says Hasina had 'green signal' for BDR Carnage     |     
  • BDR mutiny was conspiracy to destabilise BD: Inquiry chief     |     
  • Teesta Bundh ‘renovation’ in Rangpur turns into a 'sand bonanza'     |     
  • সমুদ্র থেকে লাইটার জাহাজে লাফিয়ে উঠলো ৩ মণ ইলিশ     |     

ভেনেজুয়েলা আক্রমণে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প?

গ্রীণওয়াচ ডেস্ক কুটনীতি 2025-12-01, 8:37pm

rewrewqweqwe-6787a2fba4a4b2c0e6eee28c5996369f1764599855.jpg




যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) কোনো ধরনের বিস্তারিত তথ্য না দিয়েই এক ঘোষণায় জানিয়েছেন ভেনেজুয়েলার আকাশপথ ‘বন্ধ’ করে দেওয়া হয়েছে। ক্যারিবীয় অঞ্চলে বেশ কয়েক মাস ধরে চলতে থাকা সামরিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের এই ঘোষণা ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও উসকে দিয়েছে।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ভেনেজুয়েলা অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘ঔপনিবেশিক’ কায়দায় হুমকি দিচ্ছে। দেশটি বলছে, ট্রাম্পের এই হুমকির ফলে লাখ লাখ নাগরিক নিরাপত্তাহীন অবস্থায় উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। খবর আলজাজিরার।   

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এর আগে সতর্ক করেছিলেন, ওয়াশিংটন ভেনেজুয়েলায় সামরিক হস্তক্ষেপকে ন্যায্যতা দেওয়ার অজুহাত হিসেবে মিথ্যা দাবি তৈরি করছে। ভেনেজুয়েলা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত সামরিক মহড়া চালাচ্ছে এবং যেকোনো সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বড় ধরনের সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন সেপ্টেম্বরের শুরুতে কথিত মাদকবাহী নৌকাগুলোর ওপর ধারাবাহিক হামলা চালানোর পর থেকে দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে ব্যাপক নৌশক্তির সমাবেশ ঘটিয়েছে। তবে, এসব ঘটনায় ওয়াশিংটন কোনো প্রমাণ দেয়নি, লক্ষ্যবস্তু করা নৌকাগুলো মাদক পাচারে জড়িত ছিল। এই হামলাগুলোতে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছে।

গত সপ্তাহে মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে, ওয়াশিংটন ‘কার্টেল দে লস সোলস’ যা ইংরেজিতে ‘কার্টেল অফ দ্য সানস’ নামে পরিচিত, সেটিকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, মাদক পাচার দমনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা ভেনেজুয়েলাকে টার্গেট করছে। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা ওয়াশিংটনকে বেআইনিভাবে মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের ভিত্তি তৈরি করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

জানুয়ারিতে আবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প মাদুরোর বিরুদ্ধে আরও কঠোর বক্তব্য দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার এবং ভেনেজুয়েলা থেকে অভিবাসীদের স্রোত আসার জন্য কারাকাসকে দায়ী করেছেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ট্রাম্প তার পূর্বসূরি জো বাইডেনের দেওয়া ভেনেজুয়েলার তেল ছাড় বাতিল করেন, ভেনেজুয়েলা থেকে তেল কেনা দেশগুলোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন এবং মাদুরোকে গ্রেপ্তারের জন্য পুরস্কার দ্বিগুণ করে ৫০ মিলিয়ন ডলার করে তাকে ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসী নেতা’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন, তিনি ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য সিআইএ-কে অনুমোদন দিয়েছেন। পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড, অন্যান্য যুদ্ধজাহাজ, হাজার হাজার সৈন্য ও এফ-৩৫ স্টিলথ জেট ক্যারিবীয় অঞ্চলে মোতায়েন করেছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে স্থল হামলা আসন্ন। ক্রমশ বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার মধ্যে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ও দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে কার্টেল দে লস সোলসের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগে ট্রাম্প গত সপ্তাহে মাদুরোর সঙ্গে কথা বলেছেন।

২৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে এয়ার ফোর্স ওয়ানে থাকা অবস্থায় সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি মাদুরোর সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন কিনা। এ বিষয়ে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি হয়তো তার সাথে কথা বলব। আমরা দেখব। তবে আমরা বিভিন্ন কর্মীদের সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা করছি। আমরা কথা বলতে পারি।’

ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কেন তিনি তারই মনোনীত ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের’ একজন নেতার সাথে কথা বলতে চান? তখন তিনি উত্তর দেন, ‘যদি আমরা জীবন বাঁচাতে পারি, আমরা যদি সহজ উপায়ে কাজ করতে পারি, তবে তা ভালো। আর যদি আমাদের কঠিন উপায়ে করতে হয়, তবে সেটাও ভালো।’

মার্কিন সামরিক পদক্ষেপ কি আইনগতভাবে সমর্থনযোগ্য হতে পারে?

ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচকরা যুক্তি দিয়েছেন যে প্রশাসনের এসব সামরিক পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন ছাড়াও মার্কিন সংবিধান লঙ্ঘন করছে। অধিকার পর্যবেক্ষক ও আইনি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাগরে নৌকায় হামলা করা এক ধরনের ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ মাদক বহনকারী সন্দেহে একটি নৌকার সমস্ত যাত্রীকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

যদিও হেগসেথ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং প্রতিবেদনটিকে ‘ভুয়া খবর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, মিথ্যা ও উসকানিমূলক এই প্রতিবেদনের লক্ষ্য ছিল ‘স্বদেশকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধরত অবিশ্বাস্য যোদ্ধাদেরকে অসম্মানিত করা’। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ক্যারিবীয় অঞ্চলের হামলাগুলো ‘আইনসম্মত’।

এদিকে, মার্কিন কংগ্রেস শনিবার এসব হামলার ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। রিপাবলিকান সিনেটর র‍্যান্ড পল গত অক্টোবরে ফক্স নিউজ সানডেকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি সেগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলব।’

মার্কিন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্রুস ফেইন একমত পোষণ করেছেন র‌্যান্ড পলের সঙ্গে। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের অধীনে সহযোগী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে কাজ করা ফেইন বলেন, ‘ট্রাম্প সংবিধানের বাইরে কাজ করছেন এবং খুন করছেন’। 

ফেইন আরও বলেন, শুধু কংগ্রেসই সামরিক বাহিনীর আক্রমণাত্মক ব্যবহারের অনুমোদন দিতে পারে এবং এই বিষয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কোনো আইনি ভিত্তি নেই।

কার্টেল দে লস সোলস ১৯৯০-এর দশকে আবির্ভূত হয়েছিল যখন ভেনেজুয়েলার জেনারেল এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাদক পাচার এবং এ সম্পর্কিত অপরাধের জন্য তদন্তের অধীনে এসেছিলেন। ভেনেজুয়েলায় এটি কোনো কার্টেল নয় বরং দুর্নীতি এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত সামরিক কর্মকর্তা ও পদাধিকারীদের একটি সাধারণ রেফারেন্স।