
গাজায় মার্কিন সমর্থিত যুদ্ধবিরতি সইয়ের পরও নতুন করে ইসরাইলি হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। টানা পঞ্চম দিনের মতো আকাশ ও স্থল হামলায় কেঁপে উঠে উপত্যকার খান ইউনিস ও উত্তর গাজা। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে ইসরাইল মাত্র ২৪ শতাংশ সহায়তা ঢুকতে দিয়েছে গাজায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া গাজা যুদ্ধবিরতি অবশেষে ঠুনকো প্রমাণিত হলো। চুক্তি অমান্য করে পঞ্চমদিনের মতো শনিবার (১ নভেম্বর) ভোরে খান ইউনিসে বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এতে কয়েকজন নিহত হন।
স্থানীয় সূত্র বলছে, দিনের বেশিরভাগ সময় জুড়ে ড্রোন হামলা ও গোলাবর্ষণ চলেছে ‘ইয়েলো লাইন’ সংলগ্ন এলাকায়। গাজার সিভিল ডিফেন্স জানায়, ক্রমাগত হামলায় বহু স্থানে উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শুক্রবার উদ্ধারকর্মীরা আগের হামলায় নিহত ২২ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন।
গাজা সরকার জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ১৪৫টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করছে। যা চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত ট্রাকের মাত্র ২৪ শতাংশ। অক্টোবর ১০ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ২০৩টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে, যার মধ্যে ৮৪টি ডিজেল ও ৩১টি রান্নার গ্যাস বহন করছিল। গাজা প্রশাসন এই অবরোধকে মানবিক অপরাধ হিসেবে অভিহিত করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের গাজায় নিরবচ্ছিন্ন ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দিতে ইসরাইলের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে গাজার সরকার।
গাজার পশ্চিম তীরজুড়ে নতুন করে হামলার পাশাপাশি ইসরাইলি দখলদার ও বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণ বেড়েছে। নাবলুসের দক্ষিণে তাল শহরে তিন ফিলিস্তিনি নারীকে মারধর করা হয়েছে, ক্যালকিলিয়ার পূর্বে ফারাতা শহরে জ্বালিয়ে দেয়া হয় একটি ভবন ও গাড়ি।
এদিকে তুলকারেম ও হেবরনে ইসরাইলি সেনাদের অভিযানে গুলি বর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এসব হামলা যুদ্ধবিরতির শর্তের সরাসরি লঙ্ঘন।
আল জাজিরা বলছে, যুদ্ধবিরতির পর গাজার অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নগদ অর্থের সংকট। ব্যাংক খুললেও সেখানে নেই টাকা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও মানুষ ফিরে যাচ্ছে খালি হাতে।
কেউ কেউ বাধ্য হয়ে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কেটে বেতন তুলছে কালোবাজারিদের মাধ্যমে। যার সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও দালাল চক্র। সামান্য টাকাও তুলতে দিতে হচ্ছে মোটা কমিশন, ফলে অমানবিক চাপে পড়েছে সাধারণ মানুষ।