
বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আপাতত জোটে না যাওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
রোববার (২ নভেম্বর) দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এসে প্রতীক বরাদ্দের নতুন আবেদন করেন। এ আবেদনে তারা শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলিকে প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ চেয়েছে।
পাটওয়ারী বলেন, বিএনপির চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে এবং জামায়াতে ইসলামীর ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের সঙ্গে এনসিপি যুক্ত হতে চায় না। এই দুই দল নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসলে জোটের চিন্তা করবে এনসিপি।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ধানের শীষ আর শাপলা কলিতে হবে ফাইট। আমাদের দল থেকে তিনশ’ আসনেই প্রার্থী দেয়া হবে।
এ সময় নির্বাচন কমিশনেরও (ইসি) সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, নির্বাচন কমিশন তো ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন। নির্বাচন কমিশনের স্বেচ্ছাচারী আচরণ দেখেছে দেশের মানুষ।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে নাসীরুদ্দীন বলেন, সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টারা বিভিন্ন দলের সঙ্গে গোপনে প্রেম করলে, গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত হবে। এ বিষয়ে সজাগ থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এরআগে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল হক মুসা।
এদিকে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, নির্বাচন ও সংস্কারকে আলাদা কার্যক্রম হিসেবে দেখলে ঐক্যের জায়গাটা হচ্ছে, সংস্কারের পক্ষে কেউ না থাকলে তাদের সঙ্গে আমাদের জোটে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা আমাদের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের মৌলিক দাবি, যেমন- সংস্কার ও বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তোলা, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে বাংলাদেশকে একেবারে বের করে আনা, বৈদেশিক আধিপত্যবাদ থেকে বের করে আনা -- এই দাবিগুলোর সঙ্গে কাছাকাছি কেউ থাকলে আমাদের যদি ঐক্যবদ্ধ হতে হয় বা সমঝোতায় যেতে হয়, সেটি তখন আমরা বিবেচনায় রাখব। দরজা আমাদের খোলা আছে। কিন্তু এখনও কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ৩০০ আসনে ধরে এগোচ্ছি। ঢাকা থেকেই আমি দাঁড়াব। আর কে কোন আসনে দাঁড়াবে, আমরা প্রার্থীর তালিকা এই মাসেই দিতে পারি।
প্রসঙ্গত, গত জুনে নিবন্ধন আবেদনের সময় শাপলার পাশাপাশি কলম ও মোবাইল ফোন চেয়েছিল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পরবর্তীতে দুই প্রতীক থেকে সরে এসে কেবল শাপলাতেই জোর দেয় দলটি। কমিশনে প্রতীক সংরক্ষণ কম থাকায় জুলাইয়ে ৪৬টি নতুন প্রতীক যুক্ত করে মোট ১১৫ টি প্রতীক ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তবে এই ১১৫টির মধ্যে শাপলা না থাকায় কঠোর অবস্থান নেয় এসসিপি। তবে রাজনৈতিক দলের জন্য তৈরি করা প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় এনসিপির আবেদন বারবারই নাকচ করে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকলেও প্রতীক নিয়ে ইসির সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরেই টানাপোড়েন চলছে এনসিপির। এ নিয়ে দফায় দফায় চলে চিঠি চালাচালি, সাক্ষাৎ-বৈঠক। গত ১৯ অক্টোবর প্রতীক পছন্দের শেষ দিন ছিল। তবে সে সময়ও শাপলা ছাড়া অন্য প্রতীক নেবে না বলে জানায় এনসিপি। পরে গত ৩০ অক্টোবর প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে ইসি।